মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০২:০৩ পূর্বাহ্ন
খেলাধুলা ডেস্ক:
হারলেই বাদ, জিতলে জিইয়ে থাকবে ফাইনালের সম্ভাবনা- এমন সমীকরণ নিয়ে বিপিএলের ম্যাচে মুখোমুখি হয় ফরচুন বরিশাল এবং রংপুর রাইডার্স। আর এলিমিনেটরের এই কঠিন পরীক্ষায় বরিশালকে ৪ উইকেটে হারিয়ে কোয়ালিফায়ারে পৌঁছালো রংপুর।
গতকাল মিরপুরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে মেহেদী হাসান মিরাজের দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে ৩ উইকেটে ১৭০ রান তোলে ফরচুন বরিশাল। জবাবে শামীম হোসেনের নৈপুণ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় রংপুর রাইডার্স।
গতকাল দিনের আরেক ম্যাচে প্রথম কোয়ালিফায়ারে সিলেট স্ট্রাইকার্সের মুখোমুখি হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। সে ম্যাচে যে দল জয় পেয়েছে, তারা সরাসরি বিপিএলের ফাইনালে যাবে। আর পরাজিত দলের সঙ্গে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার খেলবে রংপুর রাইডার্স। আগামীকাল সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার। আর ১৬ই ফেব্রুয়ারি একই সময়ে হবে বিপিএলের ফাইনাল। দু’টি ম্যাচই হবে মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
গতকাল ফরচুন বরিশালের দেয়া ১৭১ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে বাজে শুরু করে রংপুর রাইডার্স। রানের খাতা খোলার আগেই প্রথম উইকেট হারায় দলটি। ৫ বল খেলে শূন্য হাতে সাজঘরে ফেরেন মোহাম্মদ নাঈম।
শুরুর ধাক্কা সামলে দ্বিতীয় উইকেটে ৬১ রানের জুটি গড়েন রনি তালুকদার ও শামীম হোসেন। ১৭ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় রনি ২৯ রানে আউট হলে ভাঙে এই জুটি। তিনে নামা শামীম টিকে ছিলেন পঞ্চম উইকেট পর্যন্ত। সাজঘরে ফেরার আগে রংপুর ইনিংসের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ৫১ বলে ৪ চার ও ৪ ছক্কায় ৭১ রান করে ম্যাচসেরা হন তিনি। অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের সংগ্রহ ১৮ রান। নিকোলাস পুরান ৫ এবং ডুয়ানে ব্রাভো ২ রান করেন। শেষে দাসুন শানাকা ১৫ এবং মেহেদী হাসান ১৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন।
ফরচুন বরিশালের সাকিব আল হাসান, কামরুল ইসলাম এবং খালেদ আহমেদ দুটি করে উইকেট নেন।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনিং জুটিতে ৪৬ রান তোলেন মিরাজ ও আন্দ্রে ফ্লেচার। ১৬ বলে ১ চারে ১২ রান করে ফ্লেচার আউট হলে ভাঙে এই জুটি। দ্বিতীয় উইকেটে ৬৯ রান যোগ করে মিরাজ ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ জুটি। ২১ বলে চার ও ১ ছক্কায় ৩৪ রান করেন রিয়াদ। বরিশালের ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান আসে মিরাজের ব্যাট থেকে। ওপেনিংয়ে নেমে তৃতীয় উইকেট পর্যন্ত টিকে থেকে ৬৯ রান করেন তিনি। ৪৮ বলের ইনিংসটি ৯ চার ও ১ ছক্কায় সাজান মিরাজ। শেষে ২৫ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন করিম জানাত। ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন ভানুকা রাজাপাকসে।
রংপুর রাইডার্সের দাসুন শানাকা ৩ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। একটি উইকেট পান রাকিবুল হাসান।
কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত হওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করেন রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘ছেলেরা দুর্দান্ত খেলেছে। আজকে দল হিসেবে পারফর্ম করেছি আমরা। উইকেট খুব ভালো ছিল।’
দলীয় পারফরম্যান্সের প্রশংসা করে হুমকি দিয়ে রেখেছেন নুরুল হাসান। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস ছিল যে, (বরিশালের দেয়া টার্গেট) চেজ করে সফল হতে পারব আমরা। ঐক্যবদ্ধভাবে পারফরম্যান্স করা দরকার ছিল, আমরা সেটিই করেছি। যে দলই আসুক, তাদের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত আমরা।’
ম্যাচ সেরা শামীম হোসেন বলেন, ‘আমরা (ভালো করার) বিশ্বাস ছিল। ম্যাচটা জিতিয়ে আসতে পারলে আরও খুশি হতাম। উইকেট ভালো ছিল। আমরা অসাধারণ ব্যাটিং করেছি। আমি খুব রোমাঞ্চিত। এমন একটা ইনিংসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম আমি। সামনে আরও ভালো করতে চাই।’
বিদায়ী দল ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলেন, ‘আমাদের ইনিংসের ১৫ ওভার পর আমরা যে অবস্থায় ছিলাম, তখন আরও ১৫ থেকে ১৫টি রান বেশি করা প্রয়োজন ছিল। স্কোরবোর্ডে ১৮০ থেকে ১৯০ রান তোলা দরকার ছিল। পরিকল্পনা অনুসারে শেষ পাঁচ ওভার ব্যাট করতে পারিনি আমরা। যদিও আমরা যথেষ্ট লড়াই করেছি। ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো একটি উইকেট ছিল। আমাদের প্রত্যাশা আরও ভালো ছিল, তবে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।’
ভয়েস/জেইউ।